Saturday, March 18, 2017

বিল্ডিং নির্মাণ করার ক্ষেত্রে কিছু করণীয় কাজ জেনে নিন।

বিল্ডিং নির্মাণ করার ক্ষেত্রে কিছু করণীয় কাজ জেনে নিন।
.
১। বিল্ডিং ডিজাইনের আগেই অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা
মাটির গুনাগুণ বিশ্লেষণ ও মাটির ধারণক্ষমতা
নির্ভুলভাবে নির্ণয়পূর্বক রিপোর্ট তৈরি করতে হবে।
২। যে কোন বিল্ডিং-এর নকশা তৈরি করার পূর্বেই
স্ট্রাকচারাল নকশার বিধিগুলোর অনুসরণ করতে
হবে। মনে রাখতে হবে সঠিক স্ট্রাকচারাল নকশা না
হলে ভূমিকম্পরোধক বিল্ডিং হবে না।
৩। বিল্ডিং নির্মাণের সময় অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের
(সিভিল ইঞ্জিনিয়ার) তদারকি রাখতে হবে যাতে গুণগত
মান ঠিক থাকে।

৪। সঠিক অনুপাতে গুনগতমানের সিমেন্ট, রড, বালির
ব্যবহার হচ্ছে কিনা দেখতে হবে। কংক্রিটের চাপ
বহন ক্ষমতা কোনো অবস্থাতেই ৩০০০ পিএসআই-
এর নিচে নামানো যাবেনা । তার জন্য
সার্বক্ষণিকভাবে নির্মানাধীন সাইটে দায়িত্বে
নিয়োজিত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদেরকে কিউব অথবা
সিলিন্ডার টেস্ট করতে হবে। কংক্রিটের মিক্সাচারে
অতিরিক্ত পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ঢালাইর
পরে পানির ব্যবহার করে কংক্রিটের কিউরিং করতে হবে।
৫। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রড পরীক্ষাপুর্বক ব্যবহার
করতে হবে। রডের বহন ক্ষমতা ৬০ হাজার
পিএসআই-এর কাছাকাছি থাকতে হবে। স্ক্র্যাপ বা
গার্বেজ থেকে প্রস্তুতকৃত রড ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে ।
৬। বিল্ডিং-এর প্ল্যান ও এলিভেশান দুই দিকই সামাঞ্জ্য থাকতে হবে।
৭। নির্ধারিত ডিজাইনের বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত
ফ্লোর নির্মাণ করবেন না। বিল্ডিং কোড অনুসারে
এক্সপানশান ফাঁক রাখতে হবে।
৮। বেশি পরিমান সরু ও উঁচু বিল্ডিং-এর পাশ হঠাৎ করে
কমাবেন না। যদি কমাতে হয় তাহলে ত্রিমাত্রিক
ডাইনামিক বিশ্লেষণ করে ডিজাইন করতে হবে।
৯। বিল্ডিং-এর উচ্চতা যদি ভবনের প্রস্থের ৪ (চার)
গুণের অধিক হয় তাহলে ত্রিমাত্রিক ডাইমানশন
বিশ্লেষণ করে ডিজাইন করতে হবে।
১০। সেটব্যাক বা হঠাৎ করে বিল্ডিং-এর পাশের
মাপঝোপ কমানো যাবেনা। যদি কমাতেই হয় তাহলে
ত্রিমাত্রিক বিশ্লেষণ করে সাইট অ্যাফেক্ট
জেনে ডিজাইন করতে হবে।
১১। জটিল কাঠামোগত প্লানের জন্য অবশ্যই
ত্রিমাত্রিক ভূমিকম্প বিশ্লেষণ করে ডিজাইন করতে হবে।
১২। শেয়ার ওয়াল বা কংক্রিটের দেয়াল সঠিক স্থানে
বসিয়ে ভূমিকম্পরোধ শক্তির পরিমাণ বাড়াতে হবে।
১৩। সাপ্রতিক সময়ে যে হারে ঋষধঃ চষধঃব
ইঁরষফরহম ঝুংঃবস (বিম ছাড়া কলাম ও স্ল্যাব) বিল্ডিং তৈরি
হচ্ছে, তা মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হলেই ধ্বসে
যাবে। সুতরাং বিম, কলাম ও স্ল্যাব বিশিষ্ট বিল্ডিং তৈরি
করতে হবে।
১৫। নিচের তলা পার্কিং-এর জন্য খালি রাখতে হলে, ঐ
তলার পিলারগুলো বিশেষভাবে ডিজাইন করতে
হবে। প্রয়োজনমতো কংক্রিটের দেওয়াল দিয়ে
পিলারগুলোতে বেষ্টনীবদ্ধ করতে হবে।
১৬। বিল্ডিং-এর বিমের থেকে পিলারের শক্তি বেশি
করে ডিজাইন করতে হবে। কমপক্ষে ২০% বেশি
করতে হবে।
১৭। মাটির গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে যথাযথ
ফাউন্ডেশন প্রকৌশলগতভাবে যাচাই বাছাই করে
ডিজাইন করতে হবে।
১৮। ৫ ইঞ্চি ইটের দেয়ালগুলো ভূমিকম্পের জন্য
আদৌ নিরাপদ নয়। তাই এই দেয়ালগুলো ছিদ্রযুক্ত
ইটের ভিতরে চিকন রড দিয়ে আড়াআড়ি ও
লম্বালম্বিভাবে তৈরি করে লিন্টেলের সাথে যুক্ত
করে দিতে হবে। সবদিকে লিন্টেল দিতে হবে।
বিশেষ করে দরজা বা জানালার খোলা জায়গায় চিকন
রড দিয়ে ৫ ইঞ্চি ইটের দেয়াল যুক্ত করতে হবে।
১৯। মনে রাখতে হবে, নতুন বিল্ডিং নির্মাণে
ভূমিকম্প-প্রতিরোধক নিয়মাবলি প্রয়োগ করলে,
শুধুমাত্র ২-৩% নির্মাণ খরচ বৃদ্ধি পায়।
বাড়ি তৈরি বিভিন্ন অংশের মাপ বা আকার বা আয়তন
বিভিন্ন অংশ নিয়মাবলী
প্লিন্থ উচ্চতা 150 মিমি বা 6 ইঞ্চির কম হবে না।
লিভিং রুম বা ড্রয়িং রুম উচ্চতা 2.75 মিটার এর কম হবে না।
আয়তন 9.5 বর্গমিটার এর কম হবে না।
কোনপাশের দৈর্ঘ্য 2.4 মিটার এর কম হবে না।
রান্নাঘর উচ্চতা 2.75 মিটার এর কম হবে না।
আয়তন 5 বর্গমিটার এর কম হবে না।
কোনপাশের দৈর্ঘ্য 1.8 মিটার এর কম হবে না।
টয়লেট মাঝের খালি উচ্চতা 2 মিটার এর কম হবে না।
সাইজ 1.8 বর্গমিটার এর কম হবে না।
স্টোর রুম উচ্চতা 2.2 মিটার এর কম হবে না।
আয়তন 3 বর্গমিটার এর কম হবে না।
গ্যারেজ উচ্চতা কমপক্ষে 2.4 মিটার হতে হবে।
আয়তন কমপক্ষে 2.5 মিটার X 5 মিটার হতে হবে।
সিড়ি বাসার জন্য চওড়া 1 মিটার, হলরুমের জন্য 1.5 মিটার,
প্রতিষ্ঠানের জন্য 2 মিটার।
পাদানি বা ধাপের চওড়া কমপক্ষে 250 মিমি
একটা ধাপের উচ্চতা 150 মিমি।
যেকোন জায়গাতে খাড়া খালি উচ্চতা (হেডরুম) 2.2 মিটার।
আলো-বাতাসের ব্যবস্থা আলো-বাতাসের প্রবেশের জন্য কমপক্ষে নিচের মত খোলা দেয়াল থাকতে হবে
1. গরম আবহাওয়াতে মেঝের দশ ভাগের এক ভাগ পরিমাণ
2. ভেজা গরম আবহাওয়াতে মেঝের ছয় ভাগের এক ভাগ
3. সাধারণ আবহাওয়াতে মেঝের আট ভাগের এক ভাগ।