মনে রাখার জন্য আমার লাইফ থেকে শিক্ষা নেওয়া টিপসঃ এই টিপস গুলো আমি আমার প্রতিটি স্টুডেন্টকে দিতাম ... এবং তারা সফলও হত
-------------------------------------------------------------
✪ আপনার পড়ার রুমে অবশ্যই একটা হোয়াইট বা সাদা বোর্ড রাখবেন
সেখানে প্রতিদিন ইম্পরট্যান্ট কিছু পয়েন্ট বা সূত্র লিখে রাখবেন যা মনে রাখা খুব প্রয়োজন ...
✪ প্রতিটি পারার টপিক্স এর ফ্লো চার্ট তৈরি করুন এবং বড় পেইজে করুন মানে
এক পেইজে যাতে পুরা বিষয় নিয়ে আসা যায় ...ফ্লো চার্টের প্রতিটি পয়েন্টের
পাশে এমন একটা দুইটা ওয়ার্ড লিখে রাখুন যাতে পুরা বিষয় আপনি ব্যাখ্যা করতে
বা মনে করতে পারেন ...
✪ অনেকে মনে রাখার জন্য নোট করেন সেইটা অবশ্যই ভালো কিন্তু তারা এমন ভাবে করেন যেন এইটা ছাপা হবে বা আরেকজন পড়বে ...
আমি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময় পদার্থ বিজ্ঞান ও অন্যান্য সাবজেক্ট দুই
তিনটা বই নিয়ে এভাবে নোট করেছিলাম এতে একটা লাভ হয়েছে প্রতিটি বিষয়
সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারনা হয়েছে এবং ভালো বুঝতে পেরেছি এমন ভাবে বুঝেছি যে
অন্য যে কাউকে বুঝানোর ক্ষমতা হয়েছিল ...
কিন্তু সমস্যা হল পরীক্ষার
আগে আমি প্রতিটি প্রশ্ন অর্ধেক লিখে আর মনে করতে পারছি না ... যা হবার তাই
হল ফাস্ট ইয়ার রেজাল্ট অতো ভালো হল না
কারন আমি বুঝেছি ঠিকই কিন্তু দেখলে পারব মনে হত কিন্তু মুখস্ত না লেখার কারনে
আমার দুর্বল পয়েন্ট আমি ধরতে পারি নাই ...
সো যাই পডেন নাকেন একবার হলেও লিখবেন না দেখে এতে আপনার মাথা কাজ করবে এবং
মনেও থাকবে ...এর ফলে আপনি শিখার পর লিখতে গেলে দেখবেন একটা পয়েন্টে এসে
আন্টকে গেছেন কিন্তু বাকি লাইন গুলো মনে আছে
বিশেষ করে সাইন্সের সাবজেক্টে এমন হয় ... ✪ একটা কথা মনে রাখবেন যে লাইনে আপনি বাঁধা পরেছেন সেইটাই হলো ক্রাকিং লাইন ...
✪ এই জন্য প্রতিটি প্রশ্ন ও ম্যাথে মুখস্ত লিখে লিখে এভাবে ক্রাক লাইন খুজে বের করবেন এবং আপনার নোট হবে সেই লাইন গুলো নোট করবেন
✪ আমি প্রথম ধাক্কার পর এভাবেই নোট করা শুরু করলাম মানে এক পেইজেই
সম্পূর্ণ প্রশ্ন তুলে আনতাম পরীক্ষার আগে এইটাই পরতাম যা আমি ছাড়া আর কারো
বুঝা সম্ভব ছিল না ...
এভাবে সময়ও বাচলো আমার মনেও থাকল আমার কথা বিশ্বাস না হলে আপনারা নিজেও একবার ট্রায় করে দেখুন
মানে এক পেইজে সম্পূর্ণ প্রশ্ন এইটা করতে গেলে দেখবেন আপনাকে ইম্পরট্যান্ট পয়েন্ট খুজতে হবে যার ফলে টপিক্সটি খুভ ভালো করে পরা হবে
এবং চিন্তা করতে হবে কোন পয়েন্ট লিখলে সম্পূর্ণ প্যারা মনে থাকবে ...
এভাবে আপনি নিজেই মনে রাখার একটা টেকনিক বের করতে পারবেন
-----------------------------------------------
স্বাভবিক টিপস (মানে উপরের টিপস গুলো যাদের পছন্দ হয় নি তাদের জন্য এই টিপস গুলো )
------------------------------------------------------
পাঠ্যবইয়ে পড়া অধীত বস্তগুলি যে আমরা মনে রাখতে পারি না তার প্রধান কারণ:
এগুলো পড়ে পরীক্ষা পাস ছাড়া জীবনে আর কোনো কাজে লাগবে কিনা সে সম্পর্কে
আমাদের সম্যক ধারণা নেই। তাই মনে করি কোনো রকমে পরীক্ষায় পাশটা করে গেলে
যথেষ্ট। সারাজীবন ধরে এটা মনে রাখার দরকার নেই। আসলে সবাই ভাবে লেখাপড়া,
কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়েই শেষ হয়ে যায়। ডিগ্রির জন্যই পড়াশোনা। ডিগ্রি পেয়ে
গেলে ওটারই দাম, পড়াশোনার আর দাম নেই। এই কারণে কলেজের পাঠ্যবই-এর পড়া লোকে
পরবর্তীকালে ভুলে যায়। কারণ ভুলে যেতে চায় বলেই ভুলে যায়।
পড়তে হয় বার বার
—————————
রিপিটেশন বা বার-বার পড়া মনে রাখার প্রকৃষ্ট পদ্ধতি। ছাত্র-ছাত্রীদের বলি
যা পড়বার প্রথম তিনমাসই একবারে শেষ করে ফেলুন। পরের ন মাস ধরে চলুক
রিপিটেশন। এমন কোন ওষুধ নেই একবার খেলেই রোগ উপশম হয়। মনে রাখতে গেলে বার
বার সেটা পড়তে হয়। বিজ্ঞাপনের ছাত্র-ছাত্রীদের আমরা শেখাই Repetition and
domination. একটা বিজ্ঞাপন বার-বার repeat করো। আরও বড় করে বিজ্ঞাপন দাও।
বাস্তব জগতে কোনো ক্রিয়া রিপিটেশন ছাড়া হয় না। না কাঁদলে মা শিশুকে স্তন্য
দান করে না। কিন্তু শিশুর একবার কাঁদলেই চলে না। প্রতিবার কাঁদতে হয়।
তেমনি কারো বার বার ঘ্যান ঘ্যান করতে হয়। এই জন্যই একটা বিজ্ঞাপন বার বার
দিতে হয়। নাটকে রিহার্সালও দিতে হয় বার বার। তেমনি একটা সাবজেক্ট বুঝতে
গেলে বা জানতে গেলে বার বার করে পড়তে হয়। একে বলে অনুশীলন টাইপ, কম্পিউটার,
সাঁতার শেখার লেসন একটাই : ‘বার বার করো’।
কিন্তু বার বার পড়লেই হবে না। এমন কি বার বার পড়লে মুখস্থ হয়তে হয়েতে হয়ে
যাবে, কিন্তু বেশিদিন তা মনে রাখা যাবে না । বেশিদিন মনে রাখতে গেলে
জিনিসটি বুঝে মুখস্থ করতে হবে। সেই সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে তোতাপাখির
মতো না বুঝে মুখস্থ করাকে rote learning বলে। এইরকম মুখস্ত কাম্য নয়।
মুখস্ত করার আগে সমস্ত শব্দের অর্থ জানতে হবে ও ভাবার্থ জানতে হবে। এজন্য
বলি পড়ে বোঝা ও বুঝে পড়া। মনোযোগ অর্জন করার কতগুলি শর্ত আছে। মনকে ধ্যান ও
যোগের দ্বারা ক্রমশ একমুখী করে তুলতে হয়।
একটু নির্জনতার সন্ধানে
—————————
পড়ার জন্য একটি নির্জন ঘর বেছে নেওয়া বাঞ্জনীয়। পড়ার ঘরে অনেক ফিল্মি
হিরো, হিরোইন বা ক্রিকেট ছবি রাখে। এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই সব ছবি মনের
একাগ্রতা নষ্ট করে। পড়ার ঘরে বরং আপনার নিজের ছবি বড় করে বাঁধিয়ে রেখে দিন।
প্রতিদিন পড়া শুরুর আগে ছবির দিকে তাকিয়ে বলুন, আমাকে সমস্ত বিঘ্ন অতিক্রম
করতে হবে। আমাকে মনোযোগী হতে হবে। আমাকে বড় হতে হবে। আমাকে পরীক্ষায় সফল
হতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আর আমাকে সকল বাঁধা অতিক্রম করতে গেলে
জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এখানে ফাঁকির কোনো স্থান নেই। এবার আর একটা কাগজে
লিখুন-পড়াশোনা আমার দ্বারা হবে না। আমি বেকার থাকব। চেষ্টা না করে খাব দাবো
আর ফুর্তি করে বেড়াব। তারপর কাগজটি টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে জানালা দিয়ে
ফেলে দিন।
পরীক্ষার আগে পড়া
আমাদের ক্লাসে ফাস্ট বয় সারাদিন আড্ডা দিয়ে সারারাত ধরে পড়ত। শুনেছি ভালো
ছেলেরা নাকি তাই করে। আমাদের দেশের বাড়ি পাশের বাড়ির একটি স্কুলের ছেলে
চার-পাঁচ ঘন্টা চেঁচিয়ে পড়ত। কিন্তু সে ক্লাসে ফেল করত। কতক্ষণ পড়ব, কখন
পড়ব, এব্যাপারে কোনো ফর্মূলা দেওয়া যাবে না। খাদ্যের ব্যাপারে যেমন আমরা
বলতে পারি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দিনে ১৬ আউন্স খাদ্য বা ২৫০০ ক্যাসরি
খাদ্য লাগে। কিন্তু অনেকে ১২০০ ক্যালরি খেয়েও স্বাস্থ্যবান থাকতে পারে।
পড়ার ব্যাপারেও তাই। আসলে দেখতে হয় যতটুকু পড়ছি মনে রাখতে পারছি কিনা।
আজকাল একদিন থেকে এক সপ্তাহ কোনো বিষয়ের ওপর টানা ওয়ার্কশপ চলে। তাতে
সারাজীবনে যা শেখেননি তা নাকি ক্যাপসুল করে একদিনে টানা ঘন্টায় শিখিয়ে
দেওয়া যায়। কিন্তু J.C. Jenkins ও Dallenbach দেখিয়েছেন দু’দল বাচ্চাকে
ননসেন্স ছাড়া শেখানো হল। আর একদলকে না ঘুমাতে দিয়ে টানা শিখিয়ে যাওয়া হল।
দেখা গেল যাদের ঘুমোতে দেওয়া হয়েছিল তাদের স্মতিধারণ ক্ষমতা অবিরাম
শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো হয়েছে। অনেকে টানা অনেক্ষণ পড়তে পারে ও মনেও
রাখতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, এক ঘন্টা একনাগাড়ে পড়ার পর দশ মিনিট
বিশ্রাম দরকার। এই বিশ্রামের সময় কিন্তু টিভি দেখতে যাবেন না। তাহলে যা
পড়েছেন সেটা ইরেজ হয়ে যাবে মন থেকে। যেমন টেপ রেকর্ডারে প্রিরেকর্ডেড টেপের
ওপর রেকর্ড করলে আগেরটা ইরেজ হয়ে যায়। তার চেয়ে শবাসনে শুয়ে থাকুন। অথবা
একটু আড্ডা দিয়ে আসুন। একটু হেঁটে নিন। তারপর আবার শুরু করুন। দিন-রাত
একটানা পড়লে স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে। হজম হয় না। রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
অনেকে ঘুম তাড়াবার জন্য ওষুধ খায়, চা, কফি খায়। এর ফলে সে আরও অসুস্থ হয়ে
পড়ে।
{ ইন্টারনেট হতে সংগ্রহীত } কবির তালুকদার। হাইমচর, চাঁদপুর।